যে সব খাবার সাহায্য করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
যে সব খাবার সাহায্য করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আমরা অনেক কৌশলের কথা ও বিভিন্ন বিষয় চর্চার কথা শুনে থাকি । এসবের পাশাপাশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার গ্রহণ আরেকটি বিজ্ঞান সম্মত কার্যকরী উপায় ।
আমরা সবসমই সুস্বাদু খাবার খেতে পছন্দ করি এবং খাইও । কিন্তু খুব কম মানুষই আছে যারা এসব খাবারের পুষ্টিগুণাগুণ বিচার করে খাই ।
তাই চলুন দেখে আসি এমন কিছু সুস্বাদু খাবার যেগুলো সত্যি সত্যি এবং বিজ্ঞান সম্মতভাবে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ।
ডার্ক চকলেট
সাধারণত ডার্ক চকলেটে ৭০ শতাংশ কোকোয়া থাকে
যা ধমনীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে মস্তিষ্ক ও স্মৃতিশক্তির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য
করে ।
এছাড়া চকলেট অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর
যা মন মেজাজ প্রফুল্ল রাখতে, হতাশা কাটাতে সাহায্য করে ।
কফি
অস্ট্রিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ইন্সবার্ক’য়ের
গবেষকদের মতে দুকাপ কফিতে যে পরিমান ক্যাফেইন থাকে এই পরিমাণ ক্যাফেইন নিয়মিত গ্রহণে
স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং নিউরন মস্তিষ্কে সংকেত পাঠাতে সহায়তা করে ।
এছাড়া ফরাসি গবেষণায় দেখা গেছে ষাটোর্ধ
মহিলারা যারা দিনে তিন কাপ বা এর বেশি কফি খায় তারা অন্যদের অর্থাৎ যারা কফি কম খায়
বা খায় না তাদের তুলনায় বেশি শব্দ মনে রাখতে পারেন ।
বাদাম
আমেরিকান জার্নাল অব এপিডেমিয়োলজি’তে প্রকাশিত
একটি গবেষণা থেকে জানা যায় ভিটামিন ই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, বিশেষত বৃদ্ধ
বয়সে । বাদাম যেমন- কাঠবাদাম ও আখরোট ভিটামিন ই’য়ের ভালো উৎস। তাই বিকালের নাস্তার
একটি অংশ হিসেবে বাদামকে বেছে নিতে পারেন ।
তৈলাক্ত মাছ
এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা নিয়মিত
মাছ খায় তাদের স্মৃতিশক্তি হ্রাসের গতি বয়সের তুলনায় অনেক কম । এরা ইপিএ এবং ডিএইচএ
নামক ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ । ডিএইচএ’র মাত্রা কম থাকা আলৎঝাইমার’স রোগ এবং স্মৃতিশক্তি
হ্রাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
মানব শরীরে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড
উৎপন্ন হতে পারে না। তাই খাবারের মাধ্যমে তা গ্রহণ করতে হয়। তৈলাক্ত মাছ যেমন- স্যামন,
সারডিন-সহ মিঠাপানি ও সামদ্রিক মাছ থেকে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করতে পারেন
।
গোটা শস্য
শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতো মস্তিষ্ক-ও
শক্তি ছাড়া ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা । মস্তিষ্কে ধীরে শক্তি পৌঁছাতে গ্লুকোজ সবচেয়ে
ভালো কাজ করে।
তাই মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত
খেতে পারেন গোটা-শস্য যেমন- ‘বাদামি’ শস্যদানা, রুটি, ভাত ও পাস্তা যা রক্তে ধীরে গ্লুকোজ
সরবারহ করে এবং সারাদিন আপনাকে মানসিকভাবে তীক্ষ্ণ ও দক্ষ রাখতে সহায়তা করে ।
ব্রকলি
ব্রকলি ভিটামিন কে’তে ভরপুর । ২০১৫ সালের
আমেরিকার এক গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন কে স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে
সাহায্য করে ।
ব্রকলি গ্লুকোসিনোলেটস’য়ের ভালো উৎস যা
নিউরোট্রান্সমিটার, অ্যাসেটাইলকোলাইন ভেঙে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে, যা কেন্দ্রীয়
স্নায়ুতন্ত্রে সঠিক কার্যকারিতা পরিচালনা করতে ও আমাদের স্মৃতি তীক্ষ্ণ রাখতে সাহায্য
করে ।
স্ট্রবেরি
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের
এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী সপ্তাহে অন্তত এক কাপ স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরি খান তাদের
মানসিক পতন যারা খান না তাদের তুলনায় আড়াই বছর ধীর হয় ।
টমেটো
কয়েকটি গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, টমেটোতে
লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যা কোষের রেডিকল ক্ষয়ের বিরুদ্ধে কাজ করে
। ফলে স্মৃতিভ্রংশ বা স্মৃতির অবক্ষয় হ্রাস পায় ।
কুমড়ার বীজ
অনেক গবেষণাতেই দেখা গেছে, এক মুঠ কুমড়ার
বীজের জিংক স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে । এছাড়াও কুমাড়ার বীজ থেকে
বোনাস হিসেবে ভিটামিন বি ও ট্রিপ্টোফেন পাওয়া যায় ।
ডিম
ডিমের কুসুম কোলিন নামক অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি
উপাদানে ভরপুর যা কোষে সংকেত পৌঁছাতে সাহায্য করে। আর ‘শর্ট-টার্ম মেমোরি’ স্বল্প সময়ের
স্মৃতি উন্নয়নে সাহায্য করে ।
পালংশাক
পাতাবহুল এই সবজি নানানভাবে উপকারী । গবেষণায়
দেখা গেছে, এর ভিটামিন ই মস্তিষ্কে বয়সের প্রভাব ও স্মৃতিভ্রংশ কমাতে বা দূর করতে সাহায্য
করে ।
এক কাপ পালংশাকে দৈনিক চাহিদার ১৫ শতাংশ
ভিটামিন ই থাকে। এবং রান্না করা আধা কাপ পালংশাকে দৈনিক চাহিদার ২৫ শতাংশ ভিটামিন ই
থাকে ।
No comments